বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৫

কোরআন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়

লিখেছেন: রিয়াদ ইবনে আশরাফ


আসসালামু আলাইকুম।


          আমার এটা ব্লগের ২য় লেখা, এর আগের লেখাটি ছিলো মূর্খদের সাথে তর্কের বিষয়ে, যদিও আমার লেখার মান খুব একটা ভালো নয়, তবুও চেষ্টা করছি আমরা যতদুর পারি। আমার পরিবার আর্থিক দিক দিয়ে খুব স্বচ্ছল নয়, কিন্তু আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান ভাবী, কারন আমার ঘরে এমন একটি সম্পদ আছে যা পুরো মানব জাতির পথ প্রদর্শক, বুঝতেই পারছেন.? আল-কোর'আন! তাই আজ আল-কোর'আন নিয়ে কিছু কথা লিখলাম, এসব হয়তো আপনারা জানেন, কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের জানা দরকার, সবার উদ্দেশ্যেই লেখা। কোর'আন শরীফ বা কোরান শরীফ আরবি উচ্চারণে (আল্-কুর্'আন) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ । ইসলামী ইতিহাস অনুসারে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড অংশে এটি ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (স:) এর নিকট অবতীর্ণ হয়। কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা আছে। আয়াত বা পঙক্তি সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি। এটি মূল আরবি ভাষায় অবর্তীর্ণ হয়। 


 

মুসলিম চিন্তাধারা অনুসারে কুরআন ধারাবাহিকভাবে অবর্তীর্ণ ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বশেষ এবং গ্রন্থ অবতরণের এই ধারা ইসলামের প্রথম বাণীবাহক আদম থেকে শুরু হয়। কুরআনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ রয়েছে যার সাথে বাইবেলসহ অন্যান্য ধর্মীয়গ্রন্থের বেশ মিল রয়েছে, অবশ্য অমিলও কম নয়। ইসলামী ভাষ্যমতে কুরআন অপরিবর্তনীয় এবং এ সম্পর্কে মুসলিমরা কুরআনের যে আয়াতের কথা উল্লেখ করে থাকে তা হল: "আমি স্বয়ং এ উপদেশগ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।" মুসলমানদের মতে এটি আল্লাহর বানী বা বক্তব্য, যা ইসলামের নবী ও রাসূল মুহাম্মদের উপর আরবি ভাষায় অবতীর্ণ হয়। তাদের মতে এটি একটি মু'জিযা বা অলৌকিক গ্রন্থ যা মানব জাতির পথনির্দেশক।


         মুসলমানদের বিশ্বাস, কুরআনে মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে এবং এটি পূর্নাংগ জীবন বিধান। কুরআনে মোট ৩০ টি পারা বা অধ্যায় রয়েছে। এই পারাগুলোর মাধ্যমে ১১৪ টি সূরা ভাগ করে দেয়া হয়েছে। সূরাগুলো বিভিন্ন আকারের হলেও কুরআনের পারাগুলো প্রায় সমান আকারের। কুরআন মুখস্থকরণের ক্ষেত্রে সাধারণতম পারা অনুযায়ী শিক্ষা করানো হয়। যেসকল স্থানে সমগ্র কুরআন পাঠের আয়োজন করা হয় সেখানেও এই পারা অনুযায়ী করা হয়। মুসলমানরা বিশ্বাস করে আল কুরআন একটি ঐশি গ্রন্থ যা কোন মানুষের পক্ষে রচনা করা সম্ভব নয়। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্য এবং ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক 'ইসা বাউলাতা' কুরআনের সাহিত্যিক গঠনপ্রণালি সম্বন্ধে নিম্ন প্রকারের মন্তব্য করেছেন। - কুরআনের বার্তাগুলো বিভিন্ন সাহিত্যিক গঠনে প্রকাশিত হয়েছে, যা আরবি সাহিত্যের সবচেয়ে নিখুঁত লিখিত রচনা হিসেবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কুরআনের ভাষার উপর ভিত্তি করেই আরবি ব্যাকরণ রচিত হয়েছে, এবং মুসলিম অলঙ্কার শাস্ত্রবিদদের বর্ণনামতে, কুরআনের বাগধারাগুলো ভীষণ সুন্দর এবং মহিমান্বিত হিসেবে বিবেচিত হয়... উপসংহারে একথা বলা যেতে পারে যে, কুরআন এর বার্তা প্রকাশ করার নিমিত্তে বিপুল প্রকার ও শ্রেণীর সাহিত্যিক উপাদানের সফল প্রয়োগ ঘটিয়েছে।***


বিভিন্ন বিষয়ক আয়াত:

আদেশমুলক আয়াত   =  ১০০০
নিষেধমুলক আয়াত   =  ১০০০
ভীতিমুলক আয়াত     =  ১০০০
প্রতিজ্ঞামুলক আয়াত  =  ১০০০
দৃষ্টান্তমুলক আয়াত     =  ১০০০
ইতিহাসমুলক আয়াত =  ১০০০
প্রশংসামুলক আয়াত  =  ২৫০
পুর্ণতামুলক আয়াত    =  ১০০
উদ্দেশ্যমুলক আয়াত  =  ২৫০
অন্যান্য=৬৬ মোট     =  ৬৬৬৬
বিভিন্ন সূরা ও আয়াতের খেতাব সূরা রহমান = কুর'আনের মুকুট
সুরা বাক্বারা = কুর'আনের সিংহাসন
সুরা ইয়াসিন = কুর'আনের মন
সুরা ফাতেহা = কুর'আনের জননী
আয়াতুল কুরসী = কুর'আনের বন্ধু



মুসলিম দের মতে এটি মহান আল্লাহ'র প্রেরিত শেষ গ্রন্থ, যাহা পুরো মানব জাতির জন্যই, অনেকেই কোর'আন পড়ে প্রভাবিত হয়েছেন, অনেক ধর্মের মানুষই। কোর'আন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো, এখনো হচ্ছে, তবে আল'কুরআনে উল্লেখ আছে "তারা ষরযন্ত্র করেছিলো,আল্লাহ কৌশল করেছিলেন,এবং আল্লাহই সর্বোত্তম কৌশলকারী " কোর'আন নিয়ে সুরকার নকুল কুমার বিশ্বাসের গান রয়েছে,তা আমি কবিতা আকৃতিতে লিখলাম:


"যদি আগুন লেগে ধ্বংস হয় পৃথিবীর সব বইয়ের দোকান।
তবু বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কোরআন ।।
করবে কেমন করে কোরআন ধ্বংস আগুনেরও তেজ।
আছে বিশ্ব ভরা অগনিত কোরআনে হাফেজ।
তারা আবার ছাপায়ে আসমানী গ্রন্থ বাচাবে ইসলামের মান।
বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কোরআন ।
করলো কোরআন নিয়ে কত লোকে আদালতে কেস।
লিখলো সালমান রুশদী বিদ্বেষ পূর্ন স্যাটানিক ভার্সেস।
তবু আল-কোরআনের নূরের বাতি সারা বিশ্বে বিদ্যমান।
বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কোরআন ।।
দেখ পাকিস্তানের জিয়া মরলো দূর্ঘটনায় ভাই।
তার বিমান পুড়ে ছাই হয়েছে কোরআন পুড়ে নাই।
যেমন ছিল তেমন আছে একটি সূরাও হয়নি ম্লান।
তাই বিশ্ব থেকে হারাবে না পবিত্র কোরআন ।।
যারা কোরআন ধ্বংস করতে চায় জানে না তাহারা ।।
ঐ গ্রন্থের প্রতি পাতা ফেরেশতারা সদা দিচ্ছে পাহারা।"



 ______রিয়াদ ইবনে আশরাফ

1 টি মন্তব্য: