মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৫

"কোর'আন হাদিস নিয়ে জ্ঞান নেই যার, উত্তর না দেওয়াই উত্তম তার"

লিখেছেন : রিয়াদ ইবনে আশরাফ

           
          আমরা আজকাল নাস্তিকদের সাথে তর্কে লিপ্ত হই, তারা আমাদের নানা ভাবে প্রশ্ন করে এবং আমরা উত্তর দিয়ে থাকি, একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে তারা একই প্রশ্ন বার বার করে, কিংবা যে প্রশ্নের উত্তর তাদের জানা আছে বা যে প্রশ্ন করার কোনো দরকারই নেই সেসব প্রশ্নও, কিংবা আমাদের সবার প্রিয় সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মনিষীকে নিয়েও তারা বাজে মন্তব্য করে থাকে, অনেকে বলে মুহাম্মদ (স:) এর এতো গুলো বিয়ের কারন কি.? কিংবা বলে ইসলাম একাধিক বিয়েকে সমর্থন কেনো করে.? এই প্রশ্নের উত্তর বার বার দেওয়া হয়েছে, এই ব্লগেও শামসুদ্দোহা ভাই এই প্রশ্নের সুন্দর ভাবে উত্তর দিয়েছেন। আর তাছাড়া আরো কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা প্রশ্ন তো নয়ই, আমাদের অনূভুতি তে আঘাত করার মাধ্যম, আর রয়েছে বিজ্ঞানের কিছু গাঁজাখোরী মতবাদ আর সন্দেহে ভর্তি বিবর্তনবাদ এর উদাহারন। যেসব মানুষ আমাদের কাছে জানতে আসে তাদের আমরা জানাতে চাই, কিন্তু যারা আমাদের সময় নষ্ট করতে চায় এবং এক প্রশ্ন বার বার করে বা ভাষার মারপ্যাঁচে আজগুবি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে ফেলে তাদের সাথে তর্ক না করাই ভালো।


কোর'আন সম্পর্কে না জানলে এটাকে হাসির মনে হতেই পারে, কিংবা হাদিস না বুঝে কিংবা শব্দার্থ বা ভাবার্থ না বুঝলে মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, তাই বলে নাস্তিক হয়ে যাওয়ার কোনো কারন নেই, একটু মনোযোগ দিয়ে মনে পবিত্রতা নিয়ে পড়লে সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। আল্লাহ কোর'আন নাজিলের প্রথমেই নাজিল করেন এই আয়াত: 

"পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন" {সূরা আলাক: ১}

           নাস্তিকদের বলছি ভাইয়া, প্রভুর নামে না পড়ে যদি প্রভুকে ভুল ধরার লক্ষে পড়েন তবে তা ভুল মনে হবে, যদি মনোযোগ দিয়ে আয়াত গুলো লক্ষ করে সুন্দর ভাবে পড়েন তবে আপনার ভিতর থেকেই বলবে এটা মানুষের লেখা হতে পারে না, এটা স্রষ্টার-ই বানী। কত মহান মনীষীরা কোর'আন পরে অবাক হয়ে গেছেন,কত মানুষই তো কোর'আন পড়ে ইসলামের ছায়াতলে এসে ভীড় করেছেন, শুকরিয়া করেছেন মহান প্রভুর দরবারে, এমন গ্রন্থ কোন নবীর উম্মতরা পেয়েছেন বলুন তো, কেউ না। তবুও যারা এই গ্রন্থ কে অপবাদ দেয়, বলে এটা মুহাম্মদের সৃষ্টি তাদের সাথে তর্ক না করাই উত্তম, কারনটা সবার জানা আছে,ধরুন আপনি কোনো নাস্তিকের সাথে তর্ক করছেন, আপনি কোর'আনের কোনো কিছু তাকে বোঝালেন,কিন্তু তার হাসি পাবেই, কারন তার মতে এটা মানুষের তৈরী,বিশ্বাস বড়ই কঠিন জিনিস, যারা অবিশ্বাসী তাদের বেশীর ভাগই বুঝেন যে ইসলাম- ই সত্য, তবুও তারা তর্ক করে,অযথা কথা বলে, ইসলাম কে হারাতে চায়, আসলে এটা তার জানার ইচ্ছা নয়,এটা তার ইসলামের প্রতি ঘৃণা, হার না মানার মনোভাব অধিকাংশ নাস্তিকদের হারিয়ে দিচ্ছে, তর্কের সময় যদি বুঝতে পারেন যে নাস্তিকটি একদম মূর্খ বা পুরোপুরি ইসলামের শত্রু তবে তর্ক না করে চলে আসুন, যে বুঝতে পারেনা তাকে চেষ্টা করে বুঝানো যায়,যে বুঝতে চায় না তাকে কোনোভাবে বুঝানো যাবে না, যে ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয় তাকে মুজেজা দেখিয়েও ঈশ্বরে বিশ্বাসী করা যাবে না, তার কাছে কোর'আন হাসির খোরাকই মনে হবে। তাই সবাইকে বলছি আমাদের নাস্তিকদের সাথে তর্ক করা উচিত ই নয়, আমরা তাদের এভাবে সুজোগ দিলে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাবেই, বাক-স্বাধীনতার নামে নবী (স:) কে যা ইচ্ছা তাই বলবে, আমাদের উচিত এসব মূর্খদের থেকে দুরে থাকা, যারা জানার জন্য আসে তাদের সম্মানের সাথে জানানো আর যারা অযথা শত্রুতা করতে আসে তাদের বলা দূর হও, তাদের পাত্তা না দিলে এই ২-৪ জন এক সময় হারিয়ে যাবে, আর যদি পাত্তা দেই তবে খুব খারাপ অবস্থায় চলে যাবো আমরা,এতোদিন পাত্তা দিয়েছি বলেই তো আমার নবী মোহাম্মদ (স:) কে গালি দেওয়ার সাহস করে।


মূর্খদের সাথে তর্ক করার প্রসঙ্গে মহাকবী শেখ সাদীর একটি গল্প আছে, শেখ সাদী লিখেছেন: একবার এক খোদাদ্রোহী র সাথে এক আলেমের তর্ক হয়। নাস্তিকের সাথে সে তর্কে হেরে যায়,পরাজয় স্বীকার করে পিছপা হয়ে ফিরে আসেন। এক ব্যক্তি আলেম কে জিজ্ঞাসা করেন : হুজুর! আপনি এদেশের অদ্বিতীয় আলেম, আপনার এতো দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কেন আপনি হেরে গেলেন..? আলেম উত্তর দেন: বাবা আমার ইলম কুর'আন, হাদিসের জ্ঞান অনেক, এসবের কোনোটাই সে বিশ্বাস করে না মানেও না। সে ধর্মের মূল্যবান বক্তব্য মন দিয়ে শুনে না, তখন তার আজগুবী বাজে মন্তব্য শুনে আমার কি লাভ?



          এর থেকে আমাদের যা শিক্ষা; নির্ভরযোগ্য কোনো বিজ্ঞ লোকের উচিত নয় মুর্খ নাস্তিকদের সাথে বাহাছ করা, যারা বুঝেনা বা বুঝতে চায় না তাদের সাথে অযথা কথা কাটাকাটি করে লাভ নেই। তাই আমাদের উচিত তাদের পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজ সঠিক ভাবে করা, এক সময় তারা নিজেদেরকেই হাসির খোরাক ভাবতে শুরু করবে। আল্লাহই ভালো জানেন, আমার প্রভুই তো সব জানেন, তিনি মাফ করুন। ধন্যবাদ প্রভু লিখতে দেওয়ার জন্য। আবারও হয়তো দেখা হবে অন্য কোনো লেখায়।
আল্লাহ সবাইকে সত্য বোঝার তৌফিক দিন। আমিন।

৩টি মন্তব্য: