মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৫

কেন বিবর্তনবাদ তত্ত্ব ভুয়া ও পৌরাণিক কল্পকাহিনী? পর্ব - ১

লিখেছেন :  আদনান ইউনূস


নাস্তিকতার শেষ সম্বল হচ্ছে বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে আকড়ে ধরা, আর এটিকে জোর পূর্বক সত্য ও প্রমানিত বলে অপপ্রচার করা; ঐ প্রমানিত শব্দটি যারা উচ্চারন করে তাদেরকে আপনি যখনই বলবেন তা প্রমান করেন, তারা এই বলে পিছু হটে যাবে যে এটা একদিনে প্রমান করার কিছু নয়। এটা লক্ষ কোটি বছর ধরে সংঘটিত একটা ব্যাপার। ঠিক আছে তাও মানলাম তো কিভাবে হয়েছে? তখন তারা বলবে বিবর্তন বুঝার মত জ্ঞান আপনার নেই। তার মানে ও আপনাকে বুঝাতে পারবে না, কারন ও নিজেই বিবর্তনবাদ নিয়ে কোনদিন লেখাপড়া করেনি, না পড়েই না জেনেই তারা বিবর্তনবাদ সত্য সত্য বলে চিল্লাচিল্লি করে ।

ব্যাপারটা এমন কোন বিষয় নয় যে বিবর্তনবাদ সত্য হলে ও ধর্মকে বাঁচানোর জন্য ওটাকে মিথ্যা মিথ্যা বলে চেঁচিয়ে যাবে। বিবর্তনবাদ যদি সত্য হয় এবং বিজ্ঞানভিত্তিক হয়, আর ধর্মের সৃষ্টিতত্ত্ব মতবাদ যদি মিথ্যা হয় তাহলে অবশ্যই আমি তা মেনে নিতে এবং গ্রহন করতে প্রস্তুত, কিন্তু একটা কল্পকাহিনীকে আমি কোন যুক্তিতে সত্য বলে মেনে নিব ?

'বিবর্তনবাদ তত্ত্বের উত্‍পত্তি বিখ্যাত জীববিদ চার্লস ডারউইনের হাত থেকেই' ব্যাপারটা এমন কোনকিছু নয় বরং তার অনেক আগেই অনেকেই জীবের বিবর্তনের প্রতি তথ্যের উদ্ভাবক ছিলেন, চার্লস ডারউইন পূর্ব প্রস্তাবিত তত্ত্বটিকে আরো বৃহত্‍ আকারে জনসম্মুক্ষে পেশ করেছেন মাত্র। কেন বিবর্তনবাদ তত্ত্ব কল্পকাহিনি ও অবান্তর তার মূলে যাওয়া যাক:

প্রথমেই বিবর্তনবাদের সংজ্ঞাটা দেয়া যাক। ১৯৬৪ সনের ২৩ আগষ্ট HOUSTON POST পত্রিকায় একজন জীববিজ্ঞানী বলছেন "Evolution is very simple terms. Means that life progressed one-celled organism to its highest state. The human being by means of a series of biological changes taking place over million of years"

প্রথমেই দেখা যাক বিবর্তনবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী জীবনের উত্‍পত্তি কিভাবে?

ক্রমবিকাশ সংক্রান্ত মতাদর্শে বিশ্বাসীরা জোর গলায় বলে বেড়ায় যে নির্জীব-নিষ্প্রান বস্তু (inanimate matter) থেকেই আপনা-আপনি জীবনের উত্‍পত্তি হয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত মৌল রাসায়নিক উপাদানে গঠিত, কিন্তু পৃথিবীর বুকে অবস্থিত মৌলিক পদার্থসমূহের কোন ক্রমবিকাশ লক্ষ্য করা যায় না। ATOM দিয়ে গঠিত প্রতিটি মৌলিক পদার্থই ক্ষয়মান তথা নিম্নগামী। কোন ক্ষেত্রে তা অবক্ষয় হলে ও ঐ অবস্থা ততক্ষন পর্যন্তই স্থায়ী থাকে যতক্ষন পর্যন্ত না তা কোন স্থিতিশীল উপাদানে পরিণত হয়। হয়ে গেলে তা আর অবক্ষয় থাকে না এটা ENTROPY তত্ত্ব নামে পরিচিত। আর তাই অজৈব জড় পদার্থ থেকে প্রাণের উত্‍পত্তি কখনো সম্বব নয়। যেমন একখানা পাথর খন্ড কিংবা লৌহ খন্ড সবসময় ক্ষয়মান অর্থাত্‍ বর্তমানে যে অবস্হায় আছে তা থেকে অবনতি হবে কোন বহিঃশক্তির সাহায্য ছাড়া তা বর্তমানে যে অবস্হায় আছে তা থেকে উন্নত অবস্থায় যেতে পারবে না।

এতো গেল শুরুতেই মহাগলদের কথা! 
এবার আসা যাক কোষের বিবর্তন নিয়ে। শুরুতে একক কোষ যখন এতটা কার্যকর ছিল না তখন তা কি করে অধিকতর জটিল জীবন পদ্ধতিতে বিকাশ লাভ করল ?
ধরা যাক চোখের কথা, আমরা জীব জগতে যার চক্ষুই পরীক্ষা করি না কেন; দেখতে পাব তা সবদিকদিয়েই সম্পুর্ণ। তা ক্রমবিকাশের কোন সংক্রমন স্তরে অসম্পুর্ণ অবস্থায় আটকে নেই। ক্রমবিকাশের ফলে চক্ষুর উত্‍পত্তি হলে তা স্তরে স্তরে অসম্পুর্ণ অবস্থায় থাকার কথা। ক্রমবিকাশ অনুযায়ী প্রয়োজনের ফলেই চক্ষুর উত্‍পত্তি হয়েছে তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে চক্ষু যে এতটা উত্‍কর্ষ লাভ করবে তা সে কেমনভাবে জানতে পারল? চক্ষু দ্বারা যে দেখা যাবে তা সে কিভাবে জানতে পারল? যখন এর আগে সে দেখতে পায় নি? চক্ষু হল প্রকৃতই বহু জটিলতা সম্পন্ন আনুষাজ্ঞিক অঙ্গ। যেমন কর্ণিয়া, চোখের মনি, করণীকা, অক্ষিপট, চক্ষুধমনী, পেশী রক্তি, শিরা ইত্যাদি।

এখানে ডারউইন নিজেই তার অক্ষমতার কথা স্বীকার করেছেন যে, 
"To suppose that eye with all its inimitable contrivances for adjusting the focus to different distance. For admitting different amounts of light and for the correction of spherical and chormatic aberration could have been formed by natural selection seems i freely confees absurd in the highest degree . . .(The origin of species p.190)"

এবার ক্রমবিকাশের আরেকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা যাক। যেমন: লিঙ্গ। বিবর্তনবাদ অনুযায়ী এককোষী অ্যামিবা অযৌন উপায়ে বংশবিস্তার করতো। পরে তা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; যেমন: পুংলিঙ্গ ও স্ত্রী লিঙ্গ। এখন কথা হচ্ছে কোন লিঙ্গটির উত্‍পত্তি আগে ও তা কেন? কি কারনে ঐ লিঙ্গটির উত্‍পত্তি হল? যদি দুটি লিঙ্গই একসময়ে উত্‍পত্তি হয় তাহলে তা কি করে সম্ভব? কেননা আমরা জানি যে ক্রমবিকাশ অনুযায়ী একটির প্রয়োজনেই অপরটি গড়ে উঠেছে এবং দুটি লিঙ্গের উত্‍পত্তিই যদি একই সময়ে হয় তাহলে কি একই জায়গায় হয়েছে? যদি না হয় তাদের মধ্যে মিলন হল কিভাবে? আর স্ত্রী লিঙ্গ ও পুংলিঙ্গ পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে গড়ে উঠল কিভাবে? যখন যৌনাঙ্গ দুটি বিবর্তনের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করছিল তখন তারা কিভাবে বংশবিস্তার করত? আর তখন যৌনাঙ্গের আকার আকৃতিই বা কেমন ছিল? এটাই হল বংশ বিস্তারের মুল অধ্যায়। যতক্ষন পর্যন্ত সম্পুর্ণতা লাভ না করতে পারতো ততক্ষন পর্যন্ত তা অর্থহীন হয়ে যেত ও থাকতো।

আরেকটা দিক নিয়ে আলোচনা করা যাক যেমন স্তন্যপায়ী প্রাণীদের স্ত্রীলোকের দেহে মাতৃত্বের লালা গ্রন্হি যদি মন্থর গতির ক্রমবিকাশের মাধ্যমে গড়ে উঠতো তাহলে এ সময়ের মধ্যে যখন স্তন বর্তমান অবস্হায় ছিল না তখন তারা তাদের বাচ্চা-কাচ্চাদের প্রয়োজন পূরন করত ও পুষ্টি সাধন করত কিভাবে ? তখন যদি তাদের খাদ্যের যোগান দেয়ার অন্য কোন উপায় থাকত তাহলে স্তনের উত্‍পত্তি লাভ হল কেন?

বহুকোষ সম্পন্ন দেহ সংস্থার জটিলতাই ক্রমবিকাশবাদী G.S.CARTER কে তার বই ANIMAL EVOULUTION এ একথা বলতে বাধ্য করেছে:
"No one can at the immenesly complicated organisation of an insect or a vertebrate without doubting that our relatively simple theories can completly explain the origin of such complexity . .(1954 p.350)"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন