লিখেছেন : আমি শমশের
বিজ্ঞান আমাদের পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করছে বহুকাল থেকেই। এক্ষেত্রে তারা কতটুকু সফল আর কতটুকু ব্যর্থ সে হিসেব নাইবা করলাম। যুগের প্রয়োজনে একেকটা তত্ত্ব বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে । কোন কোন তত্ত্ব হারিয়ে গেছে কালের অতল গহ্বরে আবার কোনোটা আবার টিকে আছে স্বর্নলতিকার মত পরনির্ভরশীল হয়ে।
বর্তমান যুগের অত্যন্ত প্রতিভাবান
বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বর্তমান মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে একটি তত্ত্ব
দিয়েছেন। স্টিফেন হকিং তার 'কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস' বইতে প্রথমে বলেছেন
মহাবিশ্ব প্রথমে একত্রে একটি বিন্দুতে (অদ্বৈত বিন্দু) একত্রে মিলিয়া ছিল।
পরে এই মিলিত বিন্দুর উপর প্রচন্ড এক বিস্ফোরন ঘটে যার ফলে সৃষ্টি হয়
আমাদের এই মহাবিশ্ব। গানিতিক ভাবে ১৯৭০ সালে জ্যোতি-পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন
হকিং এবং গণিতবিদ রজার পেনরোজ, পেনরোজের আগের একটি উপপাদ্যের আলোকে প্রমাণ
করেন যে, বিগব্যাং-এর শুরুতে ‘সিংগুলারিটি ’বা অদ্বৈত বিন্দুর অস্তিত্ব ছিল ।


সাধারণ
আপেক্ষিকতাকে শূন্য সময়ের আলোকে বিবেচনা করার মাধ্যমে দেখা যায় যে,
বর্তমান থেকে পেছনে যেতে থাকলে মহাবিশ্বের আকার ক্রমশ ছোট এবং ঘনত্ব
বৃদ্ধি পায়। পেছনে যেতে যেতে যখন মহাবিশ্বের আকার শূন্য হয় তখন সাধারণ
আপেক্ষিকতার গণিত অনুযায়ী এর ঘনত্ব হয় অসীম। মহাবিশ্ব তখন অসীম ভর ও ঘনত্ব
বিশিষ্ট একটি বিন্দু যার নাম‘পয়েন্ট অফ সিংগুলারিটি’।
এই সময়ে মহাবিশ্বের সমস্ত ভর একত্রে মিশিয়ে ছিল। এই এই কথাটি আল কুরআনের সাথে মিলে যায় (২১;৩০)। তাই অত্যাধুনিক বানরের খালাতো ভাইয়েরা
(নাস্তিকগন) বলার চেষ্টা করেন মহাবিশ্ব একত্রে মিলিয়া ছিলনা; বরং তা শুন্য
হতে সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা কোয়ান্টাম প্রভাবের কথা উল্লেখ করে
থাকেন; এবং শুন্য হতে শক্তি ও ভর সৃষ্টির পক্ষে জোড়ালো মতবাদ তুলে ধরার
চেষ্টা করে চলেছেন। আমি দেখি এই যুক্তির সামান্য কোন ফাকফোকর ধরতে পারি
কিনা। প্রথমেই বলে নেই আমি কেবলমাত্র অনার্সে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছি
তাও আবার জাতীয় ভার্সিটিতে, আমার ভুল হতেই পারে। তবে আশা করব আপনারা আমার এই
ভুল ধরিয়ে দেয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করবেন এবং নতুন কোন তথ্য দিয়ে সাহায্য
করার চেষ্টা করবেন।
আমি আলোচনার শুরুতেই বলে রাখি শুন্য
থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হঊক বা না হঊক তাতে মুমিনকুলের কিছু যায় আসেনা,
কারন পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারার ১১৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
"তিনি আকাশমন্ডলী ও জমিনকে অনস্তিত্ত্ব থেকে অস্তিত্ত্বে আনয়নকারী; তিনি যখন কোন কিছু করতে চান তখন বলেনঃ হয়ে যাও আর তা হয়ে যায়।" (২;১১৭)
"বস্তত তার সৃষ্টিকার্য এরুপ যে, যখন তিনি কিছু সৃষ্টি করতে ইচ্ছে করেন, তখন বলেন, হও, অমনি তা হয়ে যায়।" (৩৬;৮২)
মহাবিশ্ব শুন্য হতে তৈরীঃ মুক্তমনা ব্লগ ও অভিজিত রয়
বাংলাদেশে
নাস্তিকতা এগিয়ে নিতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করছে অভিজিত রয়।
তিনি মুক্তমনা ব্লগ নামক একটি ব্লগে নিয়মিত কাজ করেন। সেখানে তার একটি
লেখায় তিনি মহাবিশ্ব কিভাবে শুন্য থেকে উৎপত্তি হয়েছে সে বিষয়ে
বিস্তারিতভাবে বনর্না করেছেন। আপনারা এখানে
গেলে
তার সেই গোছালো সাহিত্যের পেছনে দেখতে পাবেন যে তিনি বলছেন এই মহাবিশ্ব
সৃষ্টির পেছনে ঈশ্বর বা আল্লাহর কোন হাত নেই। গল্পের ছলে সুন্দর এবং
সাবলীলভাবে ছদ্মবিজ্ঞানের যে চর্চা তিনি করছেন তা প্রায় সবটাই আপনি ধরতে
পারবেন। এবার দেখিতো তার সেই সুবিশাল সায়েন্স ফিকশনে কি বলেছেন বা বলার
চেষ্টা করেছেন। আর প্রায় সকল নাস্তিকগনের মত তারা প্রায় সবাই স্টিফেন হকিং
এর সাথে গলা মিলান, অথচ আপনারা জানেন যখন এই স্টিফেন হকিং আস্তিক ছিল তখন
কি পরিমান গালিগালাজই না এরা করেছে। চলুনতো দেখি স্টিফেন হকিং কি বলেছে,
দেখুন
স্টিফেন হকিং বলেছেন , মহাবিশ্বের উৎপত্তির জন্য ঈশ্বরের ধারনার প্রয়োজন
নেই। আমি এখন প্রমান করার চেষ্টা করব মহাবিশ্ব তৈরীর জন্য ঈশ্বর তথা
আল্লাহর ধারনার প্রয়োজন। তার আগে আমাদের জানতে হবে, স্টিফেন হকিংরা কোন
বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আসলে এটা বলতে চাইছেন।
আমাদের
মহাবিশ্ব একসময় শুন্যাবস্থায় ছিল। এই শুন্যস্থান আসলে আক্ষরিক বা প্রকৃত
অর্থে শুন্যস্থান নয়। এটি মেকি শুন্যস্থান বা কিংবা কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম
নামে পরিচিত। কোয়ান্টাম তত্ত্বানুযায়ী শূন্যতাকে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে
করা হয়। শূন্যতা মানে আক্ষরিক অর্থে শূন্য নয়- পদার্থ বিজ্ঞানীদের মতে যে
শূন্য-দেশকে আপাত: দৃষ্টিতে শান্ত, সমাহিত মনে হচ্ছে, তার সূক্ষ্মস্তরে
সবসময়ই নানান প্রক্রিয়া ঘটে চলেছে। এর মধ্যে নিহিত শক্তি থেকে পদার্থ-কণা
স্বতঃস্ফূর্তভাবে তৈরি হচ্ছে, আবার তারা নিজেকে সেই শক্তিতে বিলীন করে
দিচ্ছে। যেমন, শূন্যাবস্থা থেকে সামান্য সময়ের ঝলকানির মধ্যে ইলেকট্রন এবং
পজিট্রন (পদার্থ-প্রতি পদার্থ যুগল) থেকে পদার্থ তৈরি হয়েই আবার তা
শূন্যতায় মিলিয়ে যেতে পারে। এই ইলেকট্রন এবং পজিট্রনের মধ্যকার ব্যবধান
থাকে ১০-১০ সেন্টিমিটারেরও কম, এবং পুরো ব্যাপারটার স্থায়িত্বকাল মাত্র
১০-২১ সেকেন্ড। ব্যাপারটাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘ভ্যাকুয়াম
ফ্লাকচুয়েশন’।
রহস্যময়’ এই শূন্য শক্তি কিংবা ভ্যাকুয়াম
ফ্লাকচুয়েশনের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিটি গড়ে উঠেছে হাইজেনবার্গের বিখ্যাত
অনিশ্চয়তা তত্ত্বের কাঁধে ভর করে। ১৯২৭ সালে জার্মান পদার্থবিদ ওয়ার্নার
হাইজেনবার্গ গাণিতিকভাবে প্রমাণ করে দেখান যে, কোন বস্তুর অবস্থান এবং
ভরবেগ যুগপৎ একসাথে নিশ্চিত ভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। বস্তুর অবস্থান ঠিক
ঠাক মত মাপতে গেলে দেখা যাবে, ভরবেগের তথ্য যাচ্ছে হারিয়ে, আবার ভরবেগ
চুলচেরা ভাবে পরিমাপ করতে গেলে বস্তুর অবস্থান অজানাই থেকে যাবে। কাজেই
হাইজেনবার্গের এই সূত্র সত্যি হয়ে থাকলে, এমনকি ‘পরম শূন্যে’ও একটি কণার
‘ফ্লাকচুয়েশন’ বজায় থাকার কথা, কারণ কণাটি নিশ্চল হয়ে যাওয়ার অর্থই হবে এর
অবস্থান এবং ভরবেগ সম্বন্ধে আমাদেরকে নিশ্চিত তথ্য জানিয়ে দেওয়া, যা
প্রকারান্তরে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্বের লঙ্ঘন।[তথ্যসুত্র] ভ্যাকুয়াম
ফ্লাকচুয়েশন কোন রূপকথা নয়, নয় কেবল গাণিতিক বিমূর্ত মতবাদ; বিজ্ঞানীরা
কিন্তু ব্যবহারিক ভাবেই এর প্রমাণ পেয়েছেন। একটি প্রমাণ হচ্ছে ‘ল্যাম্ব
শিফট’, যা আহিত পরমাণুর মধ্যস্থিত দুটো স্তরে শক্তির তারতম্য প্রকাশ করে
আরেকটি প্রমাণ হল টপ কোয়ার্কের ভরের পরিমাপ [তথ্যসুত্র]
শক্তি
থেকে ভর উৎপত্তি সম্ভব একই সাথে ভরের শক্তিতে রূপান্তর হওয়াটাও একেবারে
প্রাকৃতিক একটি ব্যাপার। কিন্তু আদিতে শক্তি তবে এলো কোথা থেকে? শক্তির
নিত্যতা সূত্র বা তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র অনুযায়ী আমরা জানি শক্তিকে
অন্য কোথাও থেকে আসতে হবে। তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র অনুযায়ী একটি বদ্ধ
সিস্টেমে মোট শক্তির পরিমাপ স্থির থাকলেই কেবল শক্তি এক রূপ থেকে অন্য রূপে
পরিবর্তিত হয়।
শক্তির নিত্যতাকে লঙ্ঘন না করেই স্রেফ শূন্য থেকে
কিভাবে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের উৎপত্তি ঘটতে পারে, তা পরিষ্কার করেছেন স্টিফেন
হকিং তার ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ (দ্য ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম) গ্রন্থে
এভাবে -
‘মহাবিশ্বে এই পরিমাণ জড়পদার্থ কেন রয়েছে তা মহাস্ফীতির
ধারণা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। মহাবিশ্বের যে সব অঞ্চল আমরা পর্যবেক্ষণ
করতে পারি সেখানে রয়েছে দশ মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন
মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন (অর্থাৎ ১ এর
পিঠে আশিটি শূন্য = ১.০ x ১০৮০) সংখ্যক জড়-কণিকা। কোত্থেকে এগুলো সব এলো?
এর উত্তর হল কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী শক্তি থেকে কণিকা ও প্রতি-কণিকা
যুগল আকারে উৎপত্তি হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই শক্তি এল কোত্থেকে? এরও
উত্তর হল মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ হল শূন্য। মহাবিশ্বে পদার্থ
সৃষ্টি হয়েছে ধনাত্মক শক্তি থেকে। অবশ্য জড়পদার্থ মহাকর্ষণের দ্বারা
নিজেকে পরিপূর্ণভাবে আকর্ষণ করছে। দুটি বস্তুখণ্ড যখন কাছাকাছি থাকে তখন
তাদের শক্তির পরিমাণ যখন তারা অনেক দূরে থাকে তা থেকে কম। এর কারণ হল
এদেরকে পৃথক করতে হলে যে মহাকর্ষীয় বল দ্বারা তারা পরস্পরের দিকে আকৃষ্ট
হচ্ছে সেই বলের বিরুদ্ধে আপনাকে শক্তি ব্যয় করতে হবে। তাই এক অর্থে
মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের রয়েছে ঋণাত্মক শক্তি। এমন একটি মোটামুটি স্থানিক সুষম
মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে দেখানো যেতে পারে যে এই ঋণাত্মক মহাকর্ষীয় শক্তি
পদার্থের প্রতিনিধিত্বকারী ধনাত্মক শক্তিকে নিখুঁতভাবে বিলুপ্ত করে দেয়।
কাজেই মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ সব সময়ই শূন্য।'
আমাদের কিছু কথাঃ প্রতিষ্ঠিত এবং অপ্রতিষ্ঠিত তত্ত্বের আলোকে
E=mc^2 ভিত্তিক আলোচনা: উপরে দেখুন তারা বলার চেষ্টা করেছে , শুন্যস্থানে যে শক্তি থাকে তা থেকেই ভর তথা
[ইলেকট্রন
এবং পজিট্রন (পদার্থ-প্রতি পদার্থ যুগল) থেকে পদার্থ তৈরি হয়েই] মহাবিশ্ব
তৈরী হয়েছে। অর্থাৎ তারা বলতে চেষ্টা করেছে শুন্যস্থানে সর্বদাই কনা
(ইলেকট্রন-পজিট্রন) বিদ্যমান। যেমন আইনস্টাইনের এই সুত্র (E=mc^2) হতে
দেখা যায় শক্তি থাকতে হলে ভরের উপস্থিতি অবশ্যই থাকতে হবে। অর্থাৎ সামান্য
পরিমান ভর অনেক শক্তির সৃষ্টি করতে পারে।
তাহলে দেখুন তারা যে বলছে ,
ইলেক্ট্রন বা পজিট্রন থেকে শক্তি কিংবা পদার্থ সৃষ্টি হয় তার উপস্থিতি
আগে থেকেই ছিল। এখন প্রশ্ন ইলেক্ট্রন কিংবা পজিট্রন আসলো কোথা হতে???
স্টিফেন
হকিং এর এই কথাটি আবার পড়ুন, কিন্তু প্রশ্ন হল এই শক্তি এল কোত্থেকে?
এরও উত্তর হল মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ হল শূন্য। মহাবিশ্বে পদার্থ
সৃষ্টি হয়েছে ধনাত্মক শক্তি থেকে। চিন্তা করুন প্রশ্ন হচ্ছে শক্তি এল কোথা
হতে, উত্তর হল মোট শক্তি শুন্য। ফাকটা ধরতে পারছেন নিশ্চয়। একটা জায়গা
শুন্য, সেখানে প্রথমে ধনাত্মক শক্তি উৎপন্ন হওয়ার পরেইনা ঋনাত্মক শক্তির
আত্মপ্রকাশ ঘটবে। প্রশ্ন হল কোন সে বল, যে বলের প্রভাবে এই ধনাত্মক শক্তির
উত্থান ঘটবে??
বিগ ব্যাং ভিত্তিক আলোচনাঃ
বিগব্যাঙ থিওরি অনুযায়ী মহাবিশ্ব শুরুতে একটা কনারুপে ছিল, কোন এক
মহাবিস্ফোরণে এটা বাড়তে শুরু করল, তৈরি হল হিগস ফিল্ড, এই ফিল্ডের ভিতর
দিয়ে যাবার প্রাক্কালে প্রতিটি কণা ভর যুক্ত হল। এখন আমরা চলে যাই সেই
কনার কাছে যা মহাবিশ্ব সৃষ্টির পূর্বে ছিল। কনাটি স্থির, এখন আপনার মনে কি
প্রশ্ন আসেনা যে কেন কনাটির বিস্ফোরন হল? চলেন আমরা ঘুরে আসি নিউটনের
প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকো থেকে, নিউটনের অমর তিনটি সূত্র :
নিউটনের প্রথম সুত্রঃ কোয়ান্টাম
ফ্লাকচুয়েশন সম্পর্কে একটু আগেই আপনারা পড়ে এসেছেন। মনে করি কোয়ান্টাম
সুত্রানুসারে কনা থেকে ভর উৎপন্ন হল। অবশ্য কণারও ভর আছে। এখন নিউটনের
প্রথম সুত্রানুসারে এই ভরটি অথবা কনাটি চিরকাল হয় সুষম গতিতে চলতে থাকবে
অথবা চিরকাল স্থির থাকবে। কনাটির কথা চিন্তা করেন, আপনি যদি বিজ্ঞান মনস্ক
মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ভাববেন না যে কনাটি নিজে থেকেই বিস্ফোরিত
হয়েছিল! তাহলে আমার প্রশ্ন কে কনাটিকে আঘাত করেছিল?????
আর ভরটি স্থির হলে কিভাবে তা থেকে মহাবিশ্ব তৈরী হবে??
উপরন্ত কোন কায়দায় প্রাথমিক ইলেক্ট্রন-পজিট্রন কাজ করবে যদি না বাইরে থেকে কোন শক্তি কাজ না করে??
সম্ভাব্য উত্তর মেকি শুন্যতার শক্তি থেকে । সেই শক্তি আসবে কোথা হতে??- ইলেকট্রন পজিট্রন কাজ করবে কিসের সাহায্যে ??-উত্তর নেই
নিউটনের দ্বিতীয় সুত্রঃ
নিউটনের দ্বিতীয় সুত্রানুসারে ভরটির ভরবেগের একটা দিক থাকবে। এখন প্রাথমিক
ভরের ভরবেগের দিক কোনটি ?? বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার তার উপর
প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া তরে বস্তুর ভরবেগের
পরিবর্তন ও সেদিকে ঘটে,।এবার কনাটির কথায় আসেন, স্থির অবস্থাতে কনাটির বেগ
ছিলনা তবে ভর অবশ্যই ছিল, কিন্তু সম্প্রসারিত হবার পর কনাটি যখন গতিশীল
হল তখন সেই ভরবেগ কোথা থেকে আসল? আর প্রযুক্ত বল ই বা কে প্রয়োগ করল?
নিউটনের তৃতীয় সুত্রঃ তৃতীয় সুত্রানুসারে প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত ক্রিয়া আছে। এখন প্রাথমিক ভরের বিপরীত ক্রিয়া কি??
আলোচনাঃ যদি
মহাবিশ্ব পয়েন্ট অফ সিংগুলারিটি এর থেকে বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে হয় তবে
উপরোক্ত তিনটি সুত্রের ব্যাখ্যা খুব সহজেই দেয়া যায়। প্রথমে বিগ ব্যাং এর
মাধ্যমে স্রষ্টা বল প্রয়োগ করেন (প্রথম সুত্র), যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের
সৃষ্টির সুচনা ঘটে অর্থাৎ বিগ ব্যাং সংগঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় সুত্রানুসারে
ভরবেগ পরিবর্তনের দিক হয় অদ্বৈত বিন্দু থেকে অসীম মহাশুন্যের দিকে এবং
প্রযুক্ত বল স্রষ্টাই প্রয়োগ করেছিল। তৃতীয় সুত্রানুসারে এর একটি
প্রতিক্রিয়া আছে যার ফলে মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং মহাবিশ্বের জায়গা বৃদ্ধি হচ্ছে। এডুইন হাবলের মহাকাশ সম্প্রসারণ সাহায্যে বর্ণনা করা
হয়েছে যে মহাবিশ্ব সম্প্রসারনশীল। এডউইন হাবলের এই সূত্রটি আপেক্ষিকতার
উপর ভিত্তি করে ব্যাখ্যা করা। আর আপেক্ষিকতা অনুযায়ী অদ্বৈত বিন্দুর
উপস্থিতি অত্যাবশ্যক। **** অদ্বৈত বিন্দু না থাকলে এডউইন হাবলের সূত্র
ব্যাখ্যা করা যাবেনা। তাই নাস্তিকগন যতই বলার চেষ্টা করুক যে মহাবিশ্ব অদ্বৈত
বিন্দু হতে আসেনি, ততই তারা ভুল পথে এগোচ্ছে। কারন সম্প্রসারণ সূত্র এখন
প্রতিষ্ঠিত সত্য।
মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারনশীল তার প্রমান আল-কুরআনে আছে।
"আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে মহাকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছি আর আমি নিসন্দেহে তা প্রসারিত করেছি।" (৫১;৪৭)
এখনকি
আপনারা নাস্তিকগনের সেই সব প্রোপাগান্ডা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন?? তারা
কিভাবে ভুলভাবে তথ্য উপস্থাপন করে তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।
বন্যা
আহমেদ এর ভাষায়, “বিজ্ঞান কোন তত্ত্বকে পবিত্র বা অপরিবর্তনীয় বলে মনে
করেনা। বিজ্ঞান ধর্মের মত স্থবির নয়, সে গতিশীল। এখানেই তার সাথে ধর্মের
পার্থক্য।”। হ্যাঁ কুরআন, পবিত্র ও অপরিবর্তনীয়। বিজ্ঞান সর্বদা গতিশীল ও
পরিবর্তনীয়। তাই কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এটা
মানার কোন যুক্তি নেই, আর যুক্তি নেই তা দিয়ে ইসলামকে প্রশ্ন করার।
কুর'আনে যে হাজারও বৈজ্ঞানিক আয়াত আছে সে বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
"অবিলম্বে আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখিয়ে দেব তাদের আশেপাশে এবং তাদের নিজেদের মধ্যেও, এমনকি এর ফলে তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ কোরআন সত্য । এটা কি যথেষ্ট নয় যে, আপনার রব সর্ববিষয়ের সাক্ষী ?"[ কোরআন ৪১:৫৩ ]
পরিশেষে বলতে চাই,
"সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে । নিশ্চয় মিথ্যা তো বিলুপ্ত হয়েই থাকে ।"[কোরআন ১৭:৮১]
খুব তথ্যবহুল পোস্ট
উত্তরমুছুন